অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু না ঘটলে ড. ইউনুস সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচন ২০২৫ সালের নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বৈষম্য বিরোধী ছাত্রসংগঠনের নতুন রাজনৈতিক দল “জাতীয় নাগরিক কমিটি” শক্তিশালী করতে অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং তরুন উপদেষ্টারা চাচ্ছেন আগামী বছর স্থানীয় সরকার নির্বাচন এবং পরবর্তী বছরে জাতীয় নির্বাচন দেওয়ার জন্য।
কিন্তু উপদেষ্টাদের কিছু অংশ বিএনপির সাথে বিরোধের ভয়ে এই ঝুঁকি নিতে নারাজ। সেই সাথে, ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় বসার পরে আন্তর্জাতিক চাপে বাংলাদেশের রাজনৈতিক গতিপথ নিয়ে তারা এখনো আত্মবিশ্বাসের ঝুঁকিতে আছেন। তাই তারা চাচ্ছেন নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে তারা তাদের দায়িত্বের সমাপ্তি ঘটাতে।
১৯৯১ সালের নির্বাচনের পরে আগামী নির্বাচন হবে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে গ্রহনযোগ্য এবং সুষ্ঠ নির্বাচন। সম্ভাব্য নভেম্বরের অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে ৩ ‘শ আসনের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে নির্বাচিত হয়ে ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাসে বিএনপি সরকার গঠন করবে।
এই সরকারের প্রধানমন্ত্রী হবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, বিএনপি যদি তাদের ঘোষিত ৩১ দফার উপর অটল থাকে এবং নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে ড. ইউনুসের সাথে দূরত্ব সৃষ্টি না হয় তবে, ড. ইউনুস হবেন বিএনপি সরকারের রাস্ট্রপতি। আর যদি নির্বাচনের পূর্বে ড. ইউনুসের সাথে বিএনপির দূরত্ব সৃষ্টি হয়ে যায়? সে-ক্ষেত্রে বিএনপি সরকারের রাস্ট্রপতি হবেন -বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফকরুল ইসলাম। রাস্ট্রপতি নিয়োগের পূর্বে মির্জা ফকরুল দলীয় মহাসচিব পদে অব্যাহতি নিবেন এবং ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব পদে তার স্থলাভিষিক্ত হবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দীন আহমেদ।
বিগত আন্দোলনে সক্রিয় বিএনপির জোটগত রাজনৈতিক দলগুলো থেকে তরুনদেরকে প্রাধান্য দিয়ে বিএনপি নবীন-প্রবীনের সমন্বয়ে সরকার গঠন করবে। নির্বাচনের সম্ভাব্য রোডম্যাপ ঘোষিত হলে আওয়ামীলীগ ধীরে ধীরে রাজপথে সক্রিয় হবে এবং অন্তবর্তীকালীন সরকার আন্তর্জাতিক চাপের মুখে আওয়ামীলীগকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দিবে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে আনপ্রেডিক্টেবল ঘটনা ঘটবে ২০২৫ সালে। ড. ইউনুসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপর দেশের সকল শ্রেণীর নাগরিকের সমর্থন থাকায় এবং ছাত্রসমাজের পেশিশক্তি ইউনুসের পক্ষে থাকায় আপাতদৃষ্টিতে অন্তবর্তীকালীন সরকারের সময়ে আওয়ামীলীগ পাল্টা বিপ্লব করার কোনো সম্ভাবনাই নাই।
কেননা, ঐক্যবদ্ধ জাতির বিপক্ষে আওয়ামীলীগ এই ধরনের ঝুঁকি কিছুতেই নিবে না। তবে, আমার প্রেডিকশন অনুযায়ী বিএনপি সরকারের গঠনের পরবর্তী সময়ে ছাত্র সমন্বয়করা ব্যাক্তিগত নিরাপত্তার জন্য দেশত্যাগ করবে এবং দেশের ছাত্রসমাজের মধ্যে একতা বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নস্যাৎ করে দিবে, ধর্ম, জাতি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতানৈক্য সৃষ্টি, সুশীলদের ডিগবাজী। আওয়ামীলীগ আন্তর্জাতিক লবিং, ভারতীয় বিভিন্ন মিডিয়া এবং বিজেপির রাজনৈতিক দলের নেতাদের পিছনে মোটা অংক ইনিভেস্ট করবে।
একই সাথে বিগত সাড়ে ১৫ বছরে নিয়োগ করা রাস্ট্রের রন্দ্রে রন্দ্রে ঘাপটি মেরে বসা আওয়ামী আমলা,পুলিশদের সাথে যোগাযোগ ধরে রাখবে। বিএনপি সরকারে গেলেও আওয়ামীলীগের নিয়োগকৃত প্রশাসনের উপর নির্ভর করেই সরকার পরিচালনা করতে হবে।
আমার অনুমান বিএনপি সরকারে যাওয়ার ২-৩ বছরের মধ্যে দেশে পাল্টা অভ্যুত্থান ঘটবে। আর সেই অভুত্থানের স্টেকহোল্ডার হবে, শেখ হাসিনার দীর্ঘ ১৫ বছরের নিয়োগকৃত প্রশাসন- আমলা, আওয়ামীলীগ এবং ভারত। বিএনপি সরকারে যাওয়ার পরে বিএনপির বিভিন্ন অপকর্ম সম্প্রসারিত হবে। আর এই অপকর্মের জন্য বিএনপির উপর দেশের মানুষের আস্থার অবনতি হবে আর এই সুযোগ লুপে নিবে আওয়ামীলীগ।বিএনপির নীতিনির্ধারণী ফোরাম ২ টি বিষয়ে ঐক্যমত হতে পারছে না।
তাদের সিনিয়র একটা অংশ চাচ্ছে খালেদাজিয়াকে প্রধানমন্ত্রী এবং তারেক রহমানকে দলের দায়িত্বে রাখতে কেননা, বিগত সরকারের আমলে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে যেইভাবে অপপ্রচার চালিয়েছিলো আওয়ামীলীগ সেটার রেশ জনগণের মাথা থেকে কাটানোর সুযোগ হয় নি। সেই সাথে আছে ভারত সহ প্রভাবশালী দেশগুলোর তারেক রহমানের প্রধানমন্ত্রী পদে বসার অনাস্থা। তাই, বিএনপির একটা অংশ চাচ্ছে দলের এবং সরকারের প্রধান একই ব্যাক্তি না হলে জনগণের কাছে দলের গ্রহনযোগ্যতা বাড়বে। ২০২৩ সালের জুনে ঘোষিত ৩১’দফার যদি বিএনপির সরকার পথ না হারায়? তাহলে পথ হারাবে না আগামীর বাংলাদেশ৷