নিউজনেস্ট ডেস্ক//
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারকে চেয়ারে বেঁধে রাখা হয়েছে- এমন একটি ছবি সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, এমপি আনারকে হত্যার আগে চেয়ারে বেঁধে নির্যাতন করার সময় ওই ছবিটি তোলা হয়েছিল। তবে, ছবিটি সত্যিই এমপি আনারের কি না, সেটা নিশ্চিত হতে পারেনি নিউজনেস্ট।
ভাইরাল ওই ছবিতে দেখা যায়, কালো রঙের একটি চেয়ারে বস্ত্রহীনভাবে বসিয়ে কাপড় দিয়ে এমপি আনারের মাথা বেঁধে রাখা হয়েছে এবং সাদা রঙের কাপড় মুখের মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। ধূসর রঙের একটি গামছা দিয়ে চেয়ারের সঙ্গে তার গলা বরাবর বেঁধে রাখা হয়েছে। এ ছাড়াও তার দুই হাত রশি দিয়ে চেয়ারের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, চিকিৎসার জন্য ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে চুয়াডাঙ্গার দর্শনার গেদে সীমান্ত দিয়ে গত ১২ মে ভারতে যান ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। তিনি পশ্চিমবঙ্গে বরাহনগর থানার মণ্ডলপাড়া লেনে গোপাল বিশ্বাস নামে এক বন্ধুর বাড়িতে ওঠেন। সেখান থেকে গত ১৩ মে ডেকে নিয়ে কলকাতার নিউ টাউনের সঞ্জীবা গার্ডেনসের ওই ফ্ল্যাটটিতে তাকে হত্যা করে মরদেহ টুকরো টুকরো করে গুম করে হত্যাকারীরা।
গত ২৬ মে এই হত্যার তদন্তের জন্য কলকাতায় যায় ডিবি পুলিশের একটি দল। গ্রেপ্তার হওয়া জিহাদকে সঙ্গে নিয়ে সঞ্জীবা গার্ডেনসের সেই ফ্ল্যাটেও যান তদন্তকারীরা। এ সময় আনার হত্যায় কারা কারা জড়িত ছিল, কার কী ভূমিকা ছিল, হত্যার পর কীভাবে আনারের দেহ টুকরো টুকরো করে বিভিন্ন স্থানে ফেলা হয়, সবই স্বীকার করে জিহাদ। জিহাদের তথ্যেই জানা যায়, ফ্ল্যাটের বাথরুমে টুকরো টুকরো করে আনারের দেহাংশ ফ্লাশ করে দেওয়া হয়।
ওই সময় ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানিয়েছিলেন, তারা কলকাতার তদন্ত দলকে সঞ্জিভা গার্ডেনের ওই ফ্ল্যাটের তিনটি কমোড থেকে স্যুয়ারেজ পর্যন্ত তল্লাশির অনুরোধ করেছিলেন। সেই অনুরোধে কলকাতার সিআইডি তল্লাশি শুরু করে। এরপর সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে দেহাংশ উদ্ধার হয়। তিনি বলেন, উদ্ধার খণ্ডিত অংশগুলো সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের মরদেহের অংশ কি না, ডিএনএ টেস্টের পর বলা যাবে।
গত ২২ মে শেরেবাংলা নগর থানায় নিহত সংসদ সদস্যের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন বাদী হয়ে অপহরণ মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় গ্রেপ্তারের পর গত ২৪ মে আসামি শিমুল ভুইয়া, তানভীর ভুইয়া ও শিলাস্তি রহমানের ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। পরে গত ৩১ মে দ্বিতীয় দফায় তাদের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। পরে তারা দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন। বর্তমানে তারা কারাগারে আটক রয়েছেন। এ ছাড়া এ মামলায় গ্রেপ্তার ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের নেতা কাজী কামাল আহমেদ বাবু সাত দিনের রিমান্ডে রয়েছেন। গত রোববার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তার এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।