জুলাই-আগস্ট গণহত্যায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি সাভার সার্কেলের সাবেক অ্যাডিশনাল এসপি শহিদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ওঠানো হয়। পরবর্তীতে ট্রাইব্যুনালের অধীনে গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনিব বলেন, যে ১৭ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি ছিল তার মধ্যে সাভার সার্কেলের সাবেক অ্যাডিশনাল এসপি শহিদুল ইসলাম ১৬ নাম্বারে ছিলেন। গতকাল তাকে কক্সবাজার থেকে গ্রেপ্তার করে আজ সকালে ট্রাইব্যুনালে নিয়ে আসা হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল যে, সাভার অঞ্চলে দুই শতাধিকের ওপর ছাত্রকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
তিনি বলেন, আর এসব হত্যাকাণ্ডের মধ্যে সব থেকে আলোচিত হত্যাকাণ্ড ছিল আসহাবুল ইয়ামিন নামের একজন ছাত্র, যাকে গুলিবিদ্ধ ও অচেতন অবস্থায় আর্মার্ড পার্সনাল কেরিয়ার অর্থাৎ এপিসি থেকে অচেতন অবস্থায় অত্যন্ত নির্মমভাবে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। ফেলে দেওয়ার পর তখনও ওই ছাত্র জীবিত ছিলেন। তারপরও তাকে টেনেহিঁচড়ে ডিভাইডারের পাশে নেওয়া হয়। আবার চ্যাংদোলা করে ঢিল দিয়ে রাস্তার অন্য পাশে ফেলে দেয় এবং আবার তার পায়ে গুলি করতে বলে। কিন্ত গুলি না করে তার অচেতন দেহের ওপর টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। পরবর্তীতে তাকে হাসপাতালে ট্রিটমেন্ট দিতে বাধা দেয়া হয়। এবং এক পর্যায়ে তিনি শহীদ হয়ে যান। তাকে তার পারিবারিক কবরস্থানে পর্যন্ত দাফন করতেও দেওয়া হয়নি।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, এই যে নির্মমতর ঘটনা, এগুলোর সঙ্গে শহিদুল ইসলামের রেসপনসিবিলিটির প্রমাণ পাওয়া গেছে। এর বাইরে সাভার অঞ্চলে যে দুই শতাধিক শহীদের ঘটনা বা অসংখ্য মানুষের ওপর যে গুলির ঘটনা, সেসময় তিনি সেখানে দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার ছিলেন। সেই অপরাধে আমাদের তদন্ত সংস্থা তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে। সেই কারণে আমরা আদালতে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চেয়েছিলাম। আদালত তা মঞ্জুর করেছেন এবং আজ তাকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল। আদালত আজকে তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন।
মো. তাজুল ইসলাম বলেন, সাভারে যে সব হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল তার অনেকগুলোতে আসামি হয়েছেন শহিদুল ইসলাম। যে মামলাগুলো থানাতে হয়েছে সেখানের আসামি হয়েছেন তিনি। সাভার রিলেটের যে অভিযোগগুলো আমাদের কাছে এসেছে সেখানেও তিনি আসামি হয়েছেন।