বাংলাদেশের সবচেয়ে আলোচিত এবং সমালোচিত একজন ব্যাক্তি নাম তার বেনজির।কে সে ব্যাক্তি চলুন আলোকপাত করা যাক বেনজিরকে নিয়ে। বেনজির এর জন্ম ১৯৬৩ সালের ১ অক্টোবর গোপালগঞ্জ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্য বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা অর্জন করেন এবং ১৯৮৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সপ্তম বিসিএস পরীক্ষায় পুলিশ ক্যাডারে উত্তীর্ণ হয়ে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে পুলিশে যোগদান করেন।
বেনজীর আহমেদ ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ পুলিশে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে তার কর্মজীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি কিশোরগঞ্জের এসপি, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অধীন ঢাকা উত্তর, পুলিশ একাডেমির প্রধান প্রশিক্ষক, পুলিশ সদর দফতরে এআইজি, প্রশাসন ও অপারেশনস ডিআইজি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালে সারদা পুলিশ একাডেমির চিফ ইন্সট্রাক্টর (সি আই) ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি টাঙ্গাইল পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উপ মহা-পরিদর্শক ছিলেন। বসনিয়া ও কসভোতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনেও কর্মরত ছিলেন। নিউ ইয়র্কের জাতিসংঘ সদর দফতরে ‘চিফ মিশন ম্যানেজমেন্ট এন্ড সাপোর্ট সার্ভিসেস’ হিসেবে এক বছর কাজ করেন। ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত র্যাবের মহাপরিচালক ছিলেন। পূর্বে তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন
বেনজীর আহমেদ বাংলাদেশ পুলিশের একজন সাবেক কর্মকর্তা যিনি পুলিশের ৩০তম মহাপরিদর্শক ছিলেন। ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ৩০শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এরপূর্বে তিনি র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এর মহাপরিচালক এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
প্রশ্ন ওঠেন তিনি গোপালগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেছেন বলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল সরকারে থাকাবস্থায় তার পদোন্নতি হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।
২০২১ সালে ‘গুরুতর মানবাধিকার লংঘনমূলক কাজে জড়িত থাকার’ অভিযোগে বাংলাদেশ পুলিশ এর এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, যেটি র্যাব নামে পরিচিত সেটি এবং এর ছয়জন বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আগে র্যাবের ডিজি ছিলেন আইজিপি বেনজির আহমেদ এজন্য নিষেধাজ্ঞায় তার নামটাও উঠে আসে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অযোগ্য।
২০২৪ সালের ৩১ মার্চ বাংলাদেশ প্রতিদিন এবং দৈনিক কালের কণ্ঠ বেনজীর আহমেদের দুর্নীতি নিয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, বেনজীর আহমেদ তার চাকরিজীবনে বেতন-ভাতা বাবদ মোট ১ কোটি ৮৪ লাখ ৮৯ হাজার টাকা আয় করলেও গোপনে তিনি সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন। বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ জেলার সাহাপুর ইউনিয়নের বৈরাগীটোল গ্রামে তিনি ৬০০ বিঘার সাভানা ইকো রিসোর্ট নামে একটি রিসোর্ট গড়ে তুলেছেন। পার্কের চারপাশে আরও ৮০০ বিঘা জমি কিনেছেন। তার স্ত্রী জিশান মির্জা, বড় মেয়ে ফারহিন রিস্তা বিনতে বেনজির এবং ছোট মেয়ে তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজিরসহ পরিবারের সদস্যরা এটি পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন। রাজধানী ঢাকার পাশাপাশি গোপালগঞ্জ জেলাতেও তিনি বিপুল পরিমাণ জমি কিনেছেন। গুলশানে তার ১৭ কোটি টাকার ফ্ল্যাট রয়েছে। বৈরাগীটোল এলাকায় অবস্থিত তার প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিনিয়োগের পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকার বেশি। বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল (বিপিএম) – ২০১১, ২০১২, ২০১৪ এবং ২০১৬
বর্তমানে গুঞ্জন ওঠেছে তিনি বাংলাদেশ সরকারকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে দেশ ত্যাগ করেছেন, আসলেই কি তা সত্যি? প্রশ্ন আছে কিন্তু উত্তর নেই!