সুনামগঞ্জের লাউরগড় (তাহিরপুর) থেকে মহেষখোলা (মধ্যনগর) পর্যন্ত সীমান্ত এলাকার চোরাচালান নির্বিঘ্ন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেখানে চোরাকারবারীদের দেখভার করাসহ তাদের কাছ থেকে “এসপি’র বখড়া” নিশ্চিত করতে পয়েন্টে পয়েন্টে ঘাট ম্যান (সুপারভাইজার) নিয়োগ করা হচ্ছে। নিয়োগ কর্তার দায়িত্বে রয়েছেন সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিক নামের জনৈক ব্যক্তি। সিদ্দিক হচ্ছেন সুনামগঞ্জের বিতর্কিত এসপি আনোয়ার হোসেনের বিশেষ সোর্স। জেলার পুলিশ মহলে তিনি এসপি সোর্স নামেই সমধিক পরিচিত।
সীমান্ত এলাকার পয়েন্টে পয়েন্টে যে ঘাট ম্যান নিয়োগ করা হয়েছে এটা পুলিশের ঘোষিত কোনো পদ পদবী নয়। তবে হাওড়-পাহাড় বেষ্টিত দুর্গম ওই সীমান্তের চোরাচালান বখড়ার আওতায় রাখার কৌশল হিসেবে অভিনব এ পদ সৃজন করা হয়েছে। বৈধ-অবৈধ যা হোক- আকর্ষনীয় এ পদের দায়িত্ব পেতে তাহিরপুর ও মধ্যনগর থানা এলাকায় রীতিমত হুড়োহুড়ি শুরু হয়েছে। দায়িত্বটি পাওয়ার জন্য অনেকে ১০/১৫ হাজার টাকা জামানত দিতেও দ্বিধাবোধ করছে না।
উল্লেখ্য, আওয়ামীলীগ সরকার বিতাড়নের পর থেকেই সৃষ্ট অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে বর্ডার গার্ড বাহিনী (বিজিবি) রুটিন দায়িত্বের বাইরে অতিরিক্ত টহল কার্যক্রম চালানো থেকেও বিরত রয়েছে। ফলে গত কয়েক মাস ধরে সুনামগঞ্জের সীমান্ত পুরোপুরি অরক্ষিত হয়ে পড়েছে, বেপরোয়া হয়ে উঠেছে চোরাচালান। সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্টে চোরাকারবারীদের রীতিমত প্রকাশ্য হাট বাজার বসছে। মওকা পেয়ে এগিয়ে গেছে পুলিশ। বিশেষ করে সুনামগঞ্জে এসপি হিসেবে আনোয়ার হোসেন দায়িত্বে যাওয়ার পর থেকেই নিজের অতিঘনিষ্ট লোকজনকে সোর্স পরিচয়ে সর্বেসর্বায় পরিনত করেছে। তাদের দ্বারাই নিয়ন্ত্রণ করা হয় থানা, ক্যাম্প, ফাঁড়ি। এসপি সোর্সরা জেলা পুলিশের জন্যও ভয়ংকর আতংকের কারণ হয়ে উঠেছে।
লুটপাটের জড়িয়ে বিতর্কিত এসপি
———
সুনামগঞ্জের ধোপজান চলতি নদীতে বালু-পাথর লুটে পুলিশ জড়িত অভিযোগ তুলে পুলিশ সুপার আ ফ ম আনোয়ার হোসেন খানের প্রত্যাহার দাবি করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা।
ইতিপূর্বে জেলা প্রশাসন আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের উপস্থিতিতেই এই দাবি জানান তারা।
সুনামগঞ্জের বিভিন্ন নদীতে অবৈধভাবে বালু-পাথর উত্তোলন বন্ধে অংশীজনদের সঙ্গে জেলা শিল্পকলা একাডেমির হাছন রাজা মিলনায়তনে এই সভা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ ছিদ্দীকী। জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস মিয়ার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন পুলিশ সুপার আ ফ ম আনোয়ার হোসেন খান, সুনামগঞ্জে বিজিবির ২৮ ব্যাটালিয়ানের অধিনায়ক লে. কর্নেল এ কে এম জাকারিয়া কাদির। সভায় বক্তব্য চলাকালীন এসপির অপসারণ চেয়ে বিক্ষোভ ও স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। অভিযোগ করেন সরকারি সম্পদ লুটপাটে পুলিশ সুপারের সরাসরি নির্দেশনা রয়েছে।